প্রকাশিত: Fri, Aug 2, 2024 10:55 AM
আপডেট: Wed, Apr 30, 2025 3:41 AM

[১]শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে শিল্পী সমাজের বিক্ষোভ [২]বিটিভি’র সামনে সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

ইমরুল শাহেদ,শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [৩.১] কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র, থিয়েটার, গণমাধ্যমসহ দৃশ্যমাধ্যমের নানা শাখার কর্মীরা ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’ ব্যানারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে হত্যা-সহিংসতা-গণগ্রেপ্তার-হয়রানির প্রতিবাদ করেছেন।

[৩.২] বৃহস্পতিবার তারা ফার্মগেট এলাকায় বৃষ্টি উপেক্ষা করেই জড়ো হতে থাকেন। ‘ভয়হীন-ন্যায্য-মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ চাই’, ‘সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করো’, ‘হত্যা-সহিংসতা-গণগ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধ কর’ স্লোগান দিতে থাকেন শিল্পীরা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

[৪] প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন মামুনুর রশিদ,  মোশাররফ করিম,আকরাম খান, নূরুল আলম আতিক, আজাদ আবুল কালাম, হাসান, আজমেরী হক বাঁধন, পিপলু আর খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, মুনেম ওয়াসিফ, ঋতু সাত্তার, তাসলিমা আকতার লিমা, তানিম নূর, সৈয়দ আহমেদ শাওকি, ওয়াহিদ তারেক, রেদওয়ান রনি, আমিরুল রাজিব, নুসরাত ইমরোজ তিশা, তানজিম ওয়াহাব, জাহিন ফারুক আমিন, তানভীর আহসান, ইয়াছির আল হক, শঙ্খ দাশগুপ্ত, সাবিলা নূর, নাসিফ আমিন, তাসনিয়া ফারিন, হুমাইরা বিলকিস, শিবু কুমার শীল প্রমুখ।

[৫] বক্তারা বলেন, সব হত্যার হিসাব ও বিচার করা, গুলি ও সহিংসতা বন্ধ, গণ-গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ, আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে দাঁড়াতে এখানে এসেছি। অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও হত্যা-সহিংসতা-গণগ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। যে ন্যায্যতা, সমতা ও মানবিক মর্যাদার অঙ্গীকার নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ঘটেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়, সেই বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। 

[৬] এদিকে রাজধানীর রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন সেন্টারে (বিটিভি)তে ‘সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা’- স্লোগানের ব্যানারে সকল সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিল্পীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিটিভি প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে মতপ্রকাশ করেন তারা। সেখানে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ধ্বংসযজ্ঞের পেছনে কারা- তা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানান শিল্পীরা। পাশাপাশি ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

[৭] এ সময় ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘আমি দেখেছি, ছাত্ররা যে কোটার আন্দোলনে নেমেছিল সেই কোটার পক্ষে আমরা সকলেই ছিলাম, কিন্তু আন্দোলনে এই ছাত্রদেরকে ঢাল করে একদল মানুষরূপী পশু জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ছারখার করে দিয়েছে আমাদের এ দেশটিকে। দেশটি হয়তো আবার আমরা কষ্ট করে ঠিক করে ফেলবো কিন্তু যে প্রাণগুলো ঝরে গেল সেগুলো আর আমরা আর কোনোদিন ফিরে পাবো না।’

 [৮] রূপবান কন্যা খ্যাত অভিনেত্রী সুজাতা বলনে, ‘সন্ত্রাসীরা এখনো ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে, তাদেরকে খুঁজে বের করে বিচার হোক। আমরা শিল্পীরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছিলাম, আছি, থাকবো। দেশজুড়ে জ্বালাও, পুড়াও এ সন্ত্রাস আমরা চাই না, আমরা মানি না।’

[৯] অভিনেত্রী শমী কায়সার বলেন, এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে যারা জড়িত আছে তাদের সকলের আমরা বিচার চাই। বাংলাদেশে এরকম নৃশংসতাা, এমন ধ্বংসযজ্ঞ, এতো প্রাণহানী আমরা আর চাই না।

[১০] অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বলেন, এই ছাত্রদের আন্দোলনকে ঘিরে জঙ্গি হিসেবে, দুঃস্কৃতকারী হিসেবে যারা সহিংসতার রাজনীতি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে চাই।’

[১১] অভিনেতা আজিজুল হাকিম বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশনে যে নৃশংস হামলা হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আমি এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই। সেইসঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকণ্ডে যে সকল প্রাণ আমরা হারিয়েছি, তাদের সকলের বিদেহী আত্মার প্রতি আমি সমবেদনা জানাই, আত্মার শান্তি কামনা করি। 

[১২] এছাড়াও সহিংসতার বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেন পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, হৃদি হক, সংগীত শিল্পী শুভ্র দেব,সোহানা সাবা, সাজু খাদেম, অরুণা বিশ্বাস, নিপূণ আক্তার সহ উপস্থিত অনেক তারকাই। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী